করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রথম দিকে সর্দি-জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা যেত। যতই দিন যাচ্ছে নতুন নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এখন হার্ট, কিডনি, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার মতো উপসর্গও প্রকাশ পাচ্ছে। আবার উপসর্গহীন করোনা রোগীও আছে। রোগ তত্ত্ববিদরা বলছেন, করোনা শুধু শ্বাসতন্ত্রেই নয়, মানবদেহের সব অঙ্গপ্রতঙ্গের ওপরই আঘাত করে। এটি ভাইরাসের আচরণগত পরিবর্তনের কারণে হচ্ছে না; বরং নতুন ভাইরাস হওয়ায় গবেষণায় নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে।
দেশে ৮ মার্চ প্রথম তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। গতকাল রবিবার পর্যন্ত দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন এবং মারা গেছেন এক হাজার ৬৯৫ জন। দেশে করোনায় সংক্রমণের প্রথম দিকে যারা শনাক্ত হয়েছেন, তাদের লক্ষণ-উপসর্গ হিসেবে সর্দি, জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট দেখা গেলেও বর্তমানে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার পাশাপাশি হার্ট, কিডনি, মস্তিষ্ক, রক্ত জমাট বাঁধা, ডায়রিয়া, মাংসপেশির ব্যথাসহ নতুন নতুন উপসর্গের কথা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ফলে অনেকেই মনে করছেন করোনার আচরণ পরিবর্তন হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের আচরণে কোনো পরিবর্তন হয়নি। করোনা শুধু শ্বাসতন্ত্রের ওপরই নয়, হৃৎপি-, মস্তিষ্ক, কিডনি, লিভারসহ সব অঙ্গপ্রতঙ্গের ওপর আঘাত করে। আমরা আগে বুঝতে পারিনি। কেন মারা যাচ্ছিল সেটি বোঝা যাচ্ছিল না। করোনা ভাইরাসের আচরণগত পরিবর্তন হয়নি, নতুন ভাইরাস বলে সব কিছু আগে বোঝা যায়নি।
তিনি বলেন, করোনার চিকিৎসা চ্যালেঞ্জিং। দেশে করোনার চিকিৎসার জন্য প্রথম দিকে আলাদা হাসপাতাল করা হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে করোনার রোগীর কিডনি, মস্তিষ্ক, লিভার, হার্ট বা অন্য কোনো অঙ্গের সমস্যা হতে পারে। এক কথায় বলতে গেলে করোনা রোগীর শরীরের যে কোনো অঙ্গের বা যে কোনো সিস্টেমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে জন্য যেসব রোগের চিকিৎসা করা যায়, সেসব জেনারেল হাসপাতালেও করোনার চিকিৎসা চালু করা হচ্ছে।
Leave a Reply