দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে সবচেয়ে কাছের বন্ধু বলে দাবি করে ভারত। এমনকি প্রতিবেশি অন্য দেশগুলোর মতো সীমান্তবিরোধও নেই বাংলাদেশের সঙ্গে। কিন্ত এতো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরও থামছে না সীমান্ত হত্যা। দু’দেশের সীমান্তে গত ছয়মাসে ভারতীয় বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে ২৫ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও আরো অন্তত ৫০ জন বাংলাদেশি বিএসএফ’র নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পরিসংখ্যান মতে, সীমান্তে সর্বোচ্চ রক্তপাতের ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালে। গত এক দশকে ৩০০ অদিক বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরো বেশি।
এদিকে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, গরু ব্যবসা ও চোরাকারবারি বন্ধ করতে কঠোর অবস্থানে তারা। কিন্তু মারা যাওয়াদের অনেকেই কৃষক কিংবা ভুলক্রমে সীমান্তের কাছাকাছি চলে যাওয়া সাধারণ মানুষ। তাই ভারতীয় বিশ্লেষকদের পরামর্শ, সীমান্তে অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
ভারত সিনিয়র সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, কোনোভাবেই সীমান্তে হত্যা মেনে নেয়া যায় না। অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হলে, দক্ষিণ এশিয়ার সংকটময় প্রেক্ষাপটে, ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ভারত অনেকদিন থেকেই সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কথা বলছে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হচ্ছে না। প্রতিশ্রুতি রাখছে না তারা।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন ও নেপালের সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা চলছে। তবুও ওই সীমান্তগুলোতে ভারত গুলি করে মানুষ হত্যা করে না। কুড়িগ্রামে ফেলানী হত্যাসহ আজ পর্যন্ত কোনো সীমান্ত হত্যার বিচার হয়নি। এতে করে সমস্যা দিনের পর দিন ঘনীভূত হয়েছে। এমতাবস্থায় ধারাবাহিক প্রতিবাদ জানিয়ে, ভারতকে চাপে রাখাতে হবে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, বারবার বলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা করা যাচ্ছে না। সেদিনও ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছি। ভুল বোঝাবোঝির কারণেই সীমান্তে গুলি চালানো কমছে না। আমরা সংকট দূর করতে চাই।
Leave a Reply